গৌরনদীতে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক  দিনে ওই এলাকার ২০টি  ঘর বাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে এখন অন্যত্র নিকট আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। হুমকির মুখে রয়েছে পূর্বহোসনাবাদ সরাকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে কোন মুহুর্তে স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

সরিকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন মিলন জানান, কিছুক্ষন পর পর নদীর তীরবর্তী বাড়িগুলো ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চরম আতংকে নদীর তীরবর্তী বাড়ির মালিকরা তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ও গাছপালা কেটে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামের রং মিস্ত্রি শাহজাহান খলিফা (৪৫) বলেন, কিছু সময় আগেও মোর  সবই ছিল । গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান ও গাছ পালা ভরা বাগান বাড়ি। এখন মোর কিছুই নাই। গত কয়েক  দিনের অবিরাম বর্ষন ও নদীর পানি বৃদ্বি  পাওয়ার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে তার  ৭৬ শতক সম্পত্তি জমিসহ বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। তিনি  এখন সর্বশান্ত হয়ে পরেছে। সর্বস্ব হারিয়ে তিনি  স্ত্রী-পরিজন নিয়ে বর্তমানে স্থানীয় আরশেদ আলী প্যাদার পরিত্যক্ত ভিটায় খুঁপরি ঘর বানিয়ে বসবাস করেছেন। একই গ্রামের সাত্তার খান জানান, নদীগর্ভে তার ৮’শ শতক জমি বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়াও ওই গ্রামের জব্বার বেপারী, ছাত্তার বেপারী, মফছের বেপারীর বাড়িও নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনের আতংকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন ওই গ্রামের শাহাদাত খান, সুলতান খান, রতন খান, মহব্বত আলী, মোচন সিকদার, আকবর আলী ও আজগর আলী সিকদারসহ অনেকেই। পূর্বহোসনাবাদ সরাকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগম বলেন, নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে  স্কুলটির সংন্নিকটে পৌঁছে গেছে। যেকোন মুহুর্তে  স্কুলটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।

নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ শাহাদাত আলী খান  বলেন, গত কয়েক বছর যাবত এ এলাকার নদী ভাঙ্গনে প্রতিবছর বাড়ি ঘর বিলীন হচ্ছে কিন্তু ভাঙ্গন প্রতিরোধে কেউ কোন ব্যবস্থা নেননি। তারা নদী ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হয়ে যাওয়া পরিবারগুলোর পূর্নবাসনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানান। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নদী ভাঙ্গনের সংবাদ পাওয়ার পর বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।