আলীকদমে পাহাড়ির ঢলে দরিদ্র মানুষের চরম দুর্ভোগ

উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। মাতামুহুরীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী ঘরবাড়ি ও ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বানের পানির তোড়ে ভেসে গেছে এক হতভাগ্য ব্যক্তি। ফসলি জমি ও আমন ক্ষেত পানিতে ডুবে চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে ও ক্ষতিগ্রস্তদের সুত্রে জানা যায়, টানা পাঁচদিনের ভারিবর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। গত মঙ্গলবার পানি বৃদ্ধি পায় বেশী। এতে উপজেলা সদরের আশপাশের কয়েকটি এলাকাসহ নয়াপাড়া, রোয়াম্ভু, মংচিং হেডম্যান পাড়া, ছাবের মিয়া পাড়ার উত্তর দিক, রেপাড় পাড়া, মংপাখই হেডম্যান পাড়া, ভরির মূখ, বাবুপাড়া, মেরিনচর, কুরুকপাতা, জানালী পাড়া ও তৈন খালের দোছরিসহ মাতামূহুরী নদীর তীরবর্তী চর এলাকাগুলোতে আট নয় ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে।

আলীকদমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার সংখ্যা অন্তত: পাঁচশতাধিক বলে জানিয়েছেন এমপি প্রতিনিধি ও আলীকদম সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জামাল উদ্দিন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করছেন। অনেকের বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে মাতামূহুরী নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের দূর্ভোগের মাত্র বেড়েছে বেশী। তীরবর্তী বাসিন্দাদের অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে আত্মীয় স্বজনদের বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানান চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের মংচা পাড়া বাসিন্দা মংছেংনুং মার্মা। গত মঙ্গলবার ১১টার দিকে দক্ষিণ পূর্বপালং পাড়ার মোঃ নূর (১৮) তৈন খালের বন্যার পানিতে লাকড়ি ধরতে নামলে পানির স্রোতে তলিয়ে যায় এই হতভাগ্য। এখনো পর্যন্ত তার হদিস পাওয়া যায়নি।

প্রবল বর্ষণে আলীকদমের সাথে জেলা সদর ও পার্শ্ববর্তী উপজেলাসমুহের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রধান সড়কের ওপর পানি উঠে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে আলীকদম-ফাঁসিয়াখালী প্রধান সড়কের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভেঙ্গে গিয়ে আশংকাজনক পর্যায়ে পেঁছেছে। গ্রামীণ সড়কের অবকাঠামোরও পাহাড়ী ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাহাড়ি ঢলে বিশেষ করে নদী তীরবর্তী চাষীরা চরম ক্ষতির শিকার হন। আমন চাষ ও শাকসবজির চাষীদের মাথায় হাত উঠেছে।

আলীকদম ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকায় নৌকা যোগে পরিদর্শন করেছি। শতাধিক লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তবে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেননি। দ্র্রুতগতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন।  ২নং চৈক্ষ্যং ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদিনের সাথে মুঠোফোনে বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি এলাকার বাইরে আছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে তিনি কোন তথ্য দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদ্দুজামান সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করতে বলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি উপজেলা প্রশাসন পর্যবেক্ষণে রয়েছে।