অভিযোগ দিয়েও বাঁচানো গেল না ১০টি মেহেগনি গাছ

অবৈধভাবে বিক্রি হওয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১০টি মেহেগনি গাছের প্রাণ বাঁচাতে পারেননি এক শিক্ষক। লক্ষ টাকার গাছগুলো গোপনে নামের মাত্রমূল্যে কিনে নিয়ে কেটে নিয়েছে ঠিকাদার।

এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের কোন সম্পত্তি বিক্রি করতে হলে সকল সদস্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রেজ্যুলেশন করে বিক্রয় পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হয়। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চানমিয়া সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঠিক আগ মূূহূর্তে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ১০টি মেহেগনি গাছ নামেমাত্র নিজের লোকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। খালেকের হাট মিষ্টির দোকানদার ফজলুল হক বেপারী সর্বচ্চ দরদাতা হিসেবে গাছগুলো ডাকে কিনে নিয়েছেন। ঠিকাদারের হাত থেকে গাছগুলোর প্রাণ বাঁচাতে খালেকের হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহব্বত আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও ঠিকাদার গাছগুলো মঙ্গলবার একদিনেই কেটে নিয়েছেন।

অভিযোগকারী শিক্ষক মহব্বত আলী আক্ষেপ করে বলেন, গাছগুলো দাঁড়িয়ে ইউনিয়ন পরিষদের শোভাবর্ধণ করেছিল। ঠিকাদারের হাত থেকে গাছগুলোর প্রাণ বাঁচাতে দ্রুত ইউএনও’র কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ হল না। বাঁচাতে পারলাম না ১০টি তাজা গাছের প্রাণ।

বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ রিয়াজ অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, গাছ বিক্রিতে দুর্নীতি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে এক শিক্ষক একটি অভিযোগ দিয়েছে সেটি তদন্তের জন্য কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম শাহীন মন্ডল বলেন, শুনেছি ইউএনও অফিস থেকে কয়েকটি চিঠি এসেছে। খুলে দেখবো সেগুলো কিসের।

ইউপি সদস্য আজিজ সরদার, মোহন আকন ও সায়েদা বেগম বলেন, গাছ বিক্রির ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা। চেয়ারম্যানও আমাদের কখনো কোন কিছু জানায়নি। এই গাছগুলো তিনি না বিক্রি করলেও পারতেন।

আরেকজন ইউপি সদস্য সেলিম সরদার বলেন, সাদা কাগজে চেয়ারম্যান অনেকবার আমাদের স্বাক্ষর নিয়েছিল। এর বিরুদ্ধে আমরা ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান থাকাকালে শেষ সময়ে তার রোষানলের বলি হল এই ১০টি মেহেগনি গাছ।

ইউনিয়ন পরিষদ সচিব আবুল কালাম মিয়া বলেন, আমি চলতি বছরের ৬জানুয়ারী যোগদান করেছি। এই সময়ে মেহেগনি গাছ বিক্রির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তিনি গাছ বিক্রি করলে এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এ ধরণের একক সিদ্ধান্তে ইউনিয়ন পরিষদের গাছ বিক্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চানমিয়া বলেন, ২৩জানুয়ারীর মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গাছগুলো বিক্রির জন্য দরপত্র আহব্বান করা হয়। ৩জন দরদাতার মধ্যে সর্বচ্চ দরদাতা ফজলুল হক বেপারীকে ২০হাজার টাকায় গাছ দেয়া হয়েছে।

নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ মারুফ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের গাছ বিক্রিতে দুর্নীতি হলে অবশ্য তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নিব।