উজিরপুরে টর্নেডোতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে এখনো কোন ত্রান পৌঁছেনি

১১ টি গ্রামের আশ্রয়হীন হয়ে পড়া প্রায় সহস্রাধিক মানুষের মাঝে এখনো কোন ত্রান পৌঁছেনি। এ গ্রামগুলোতে এখন ১ হাজার ৫০ টি পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেছেন।

Tornedo on Uzirpur
উজিরপুর উপজেলার তেরদ্রোরন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, দিনমজুর হাসেম সরদার তার বির্ধ্বস্ত ঘরে আশেপাশে মালামাল খুঁজছে। তিনি জানান, ঘরে বিয়ের উপযোগী মেয়ে থাকার কারনে এনজিও ও আাত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কিছুদিন আগে প্রায়  ৮০ হাজার টাকা খরচ করে টিনের একটি ঘর তুলেছিলেন। টর্নেডোতে তার ঘরটি বির্ধ্বস্ত হয়ে ঘরের সব মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। হাসেম সরদার তার স্ত্রী খালেদা বেগম ও তিন সন্তান নিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। একইভাবে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করার দুর্ভোগের কথা জানালেন, ভ্যানচালক রহম আলী সরদার (৪৫), ফজলুল হক সরদার (৫৫), সহিদুল ইসলাম (৪০), দিনমজুর আব্দুল হাকিম (৬০), ফজিলাতুন নেছা (৪২) সহ অনেকেই। তারা প্রত্যেকেই খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন। একইভাবে জানালেন, ওই গ্রামের আশ্রয়হীন হারুন হাওলাদারের স্ত্রী শাহনাজ বেগম, মৃত মজিদ হাওলাদারের পুত্র জাফর হাওলাদার (৪৫)।

উপজেলার বৈভাদ্রী গ্রামের মোঃ আজাহার খান (৬০), কমলাপুর গ্রামের জামাল হাওলাদার (৪০), জোনাব আলী (৪৫) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টর্নেডোর ৪ দিন অতিবাহিত হলেও মোগো দুরাবস্তা দেখতে কেউই আসেনি। তারা আরো জানান, তাদের পরিবারের পড়নের বস্ত্র ছাড়া আর কিছুই নেই। গুঠিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডাঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, টর্নোডোতে গুঠিয়া ইউনিয়নের ১১ টি গ্রাম লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। এ ইউনিয়নের ১ হাজার ৫০ টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। অন্যবস্ত্রের অভাবে তারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করলেও এখনো ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে মাঝে কোন ত্রান পৌঁছেনি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

উজিরপুর উপজেলা ত্রান ও পূর্নবাসন অফিসের দেয়া তথ্য মতে, টর্নেডোতে ৩ শত ৭২ টি সম্পূর্ন ও ৬ শত ৪ টি পরিবারের আংশিক ঘর বাড়ি বির্ধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ জানান, টর্নেডোতে আহতদের চিকিৎসার জন্য জরুরী ত্রান হিসেবে ৫ মেঃ টন চাল ও নগদ ১০ টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া এখনো কোন ত্রান এসে পৌঁছেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের উল্লেখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয় সিন্ধু তালুকদার বলেন, জরুরীভাবে শুকনো খাবার সরবারহ করা হয়েছে। গৃহহীনদেন গৃহ নির্মান সহায়তা চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভাবে বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্ধ পেলেই তা বিতরন করা হবে।