অন্ধকার ভবিষ্যত !!!

সরদার জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভালো ফলাফল করেও মেধাবী ছাত্র মাসুম চরম আর্থিক অনটনের কারনে উচ্চ শিক্ষার আশা ছেড়ে দিয়েছে। অর্থাভাবে উচ্চ শিক্ষা তার জন্য আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। সমাজের মহানুভব সমাজপতি, বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠান ও সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মেধাবী মাসুম উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ডাক্তার হতে চায়।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ধুরিয়াইল গ্রামের ভ্যানচালক খোরশেদ সরদার ও রোগাক্রান্ত শাহিদা বেগমের দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের মধ্যে মাসুম হচ্ছে সবার ছোট। অভাবের সংসারে কোন সন্তানকেই লেখাপড়া করাতে পারেনিন খোরশেদ। বিভিন্নরোগে আক্রান্ত হয়ে গত একবছর ধরে শষ্যাশয়ী শাহিদা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, “এত কষ্টের মইধ্যেও মোর মাসুম যে পরীক্ষার ভালো পাস করছে, এইয়া আল্লার দয়া ছাড়া আর কিছুই না”। ভ্যানচালক খোরশেদ সরদারের একার উপার্জনেই ‘যেমন নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ ঠিক তেমনি চলছিলো তার ৬ সদস্যর পরিবার। ভ্যানচালক পিতার সংসারেমেধাবী মাসুম সরদার স্বপ্ন দেখে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাবা-মার দুঃখ ঘুচাবার। মেধাবী ছাত্র মাসুম সরদার জানান, উপজেলার চাঁদশী ঈশ্বর চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায়ই সে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করে। প্রতিদিন বিভিন্ন ক্লাশের ১০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ানোর উপার্জিত অর্থের একটি অংশ দিতো ভ্যানচালক পিতা খোরশেদের হাতে। বাকি টাকা দিয়ে পড়াশুনার খরচ জুগিয়েছে মাসুম। শত কষ্টের মাঝে এস.এস.সি পরীক্ষার সে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত হয়। ওই সময়ও তার কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পরে। সে সময় পাশ্ববর্তী কটকস্থল গ্রামের দানশীল দিপু মাঝির আর্থিক সহযোগীতায় মাসুম বার্থী ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়। কলেজের অধ্যক্ষ কাজী আব্দুস সালামসহ অন্যান্য শিক্ষকরা তাকে সর্বরকম সহাযোগীতা করেছেন বলেও মাসুম জানায়। এইচ.এস.সি-তে ভালো ফলাফল করেও অর্থাভাবে মাসুমের ভালো কোন কলেজের ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।  
আক্ষেপ করে মেধাবী ছাত্র মাসুম সরদার বলেন, “ভ্যান চালক পিতার সংসারে টাকার অভাবে মাকে কোন উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। আমার মায়ের মতো আর যেন কোন মা অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় শষ্যাশয়ী না হন। সে জন্য আমি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ডাক্তার হতে চাই”। ভ্যানচালকের পুত্র মেধাবী মাসুমের বুকভরা এ স্বপ্ন কি সত্যি হবে? সে কি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ডাক্তার হতে পারবে? সমাজের মহানুভব সমাজপতি, বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠান ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মেধাবী ছাত্র মাসুম সরদারের বুকভরা স্বপ্ন হয়তো বা কোনদিন পূরন হতে পারে।