ইজারাবিহীন ব্যবস্থাপনায় বদলে গেছে সদরঘাটের চিত্র

বুড়িগঙ্গাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ঢাকা শহরের সভ্যতা, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছুরই গোড়াপত্তন হয় সদরঘাট এলাকাকে ঘিরে। মোঘল যুগ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ আমলের অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে সদরঘাট এলাকায়। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় নৌ-পথে যাতায়াতকারী যাত্রীসাধারণের উন্নত ও আধুনিক সেবা প্রদান এবং সুষ্ঠু বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯৬৭ সালে বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ করে। সেই থেকে সদরঘাট টার্মিনালের কুলি ব্যবস্থাপনা ইজারার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু একশ্রেণীর মধ্যস্বত্ব সুবিধাভোগী ইজারাদারের কারনে কুলি তার শ্রমের ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। ইজারা ব্যবস্থার কারনে কুলিদের দৌরাত্ম্য এবং ইজারাদারের ছত্রচ্ছায়ায় অবৈধ হকার, পকেটমার, ছিঁচকে চোরদের অত্যাচারে যাত্রীদেরকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছিল দীর্ঘদিন থেকে। যাত্রী হয়রানি বন্ধের উদ্দেশ্যে ও শ্রমিকের আয়কৃত মজুরি পুরোটাই যাতে শ্রমিক পায় এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে সদরঘাট টার্মিনাল ভবন ইজারামুক্ত করে বিআইডব্লিউটিএ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কুলি নিয়ে শ্রম ব্যবস্থাপনা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
সরেজমিনে সদরঘাট টার্মিনালে ঘুরে বেশ কিছুসংখ্যক যাত্রীর সাথে আলাপ করে নতুন এ ব্যবস্থায় তাদের সন্তুষ্টির কথা জানা যায়। নতুন এ ব্যবস্থা প্রণয়নের জন্য তারা বর্তমান মহাজোট সরকারকে ধন্যবাদ জানান। টার্মিনালে রক্ষিত অভিযোগ বাক্সসমূহে অবশ্য যাত্রীসাধারণ বেশ কিছু পরামর্শ প্রদান করেছেন বলে বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরীফ মোঃ আফজাল হোসেন জানান। তারা টার্মিনালের প্রতিটি গেটে ওজন মাপার যন্ত্র দ্রুত স্থাপন, টার্মিনালে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্ন টয়লেটসহ পার্কিং ইয়ার্ডের পার্শ্ববর্তী দুইটি গেট দিয়ে প্রবেশকারী যাত্রীদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের দাবী জানিয়েছেন। যাত্রীসাধারণের এসব দাবী পূরণসহ ধীরে ধীরে আরো উন্নত যাত্রীসেবা প্রদানের অঙ্গীকার করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান।