চা বিক্রেতা মামুনের সাফল্য

সহপাঠীরা পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য যখন স্কুলে উপস্থিত হয়েছে, ঠিক তখন মামুন ব্যস্ত ছিলো চা বিক্রির কাজে। ১৫ মে বিকেল চারটার দিকে মামুনের বন্ধু আনোয়ার হোসেন দোকানে হাজির হয়ে মামুনের জিপিএ-৫ প্রাপ্তর সাফল্যর কথা জানায়। সাফল্যর কথা জানতে পেরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে মামুন। অভাব অনটন আর দারিদ্রতাকে জয় করে আল-মামুন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল নিরাঞ্জন বৈরাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের এস.এস.সি পরীক্ষায় বানিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। উপজেলার বাকাল গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মান্নান মোড়লের ৩ সন্তানের মধ্যে মামুন হচ্ছে বড়। তাই দিনমজুর পিতার পাশে সংসারের দায়িত্ব নিতে হয় তাকে।
দিনমজুর আব্দুল মান্নান জানান, অভাবের সংসারে কখনো খেয়ে আর কখনো না খেয়ে সংসারের হাল ধরতে দোকান চালানোর পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে গেছে তার পুত্র আল-মামুন। তার ৫ সদস্যর পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস চায়ের দোকানে। তিনি আরো জানান, পরীক্ষার ৫/৬ মাস পূর্বে সংসারের চরম অভাব অনটনের মাঝে মামুনকে স্কুলে যেতে তিনি বারন করেছিলেন। সে সময় স্কুলের শিক্ষক সুভাষ মন্ডলের সার্বিক সহযোগীতায় মামুন পরিবারের কাউকে না জানিয়ে চা বিক্রির অবসরে (রাতে) দোকানে বসেই তার পড়াশুনা চালিয়ে যায়। পুত্রর অভাবনীয় সাফল্যের খবর শুনে বাবা আব্দুল মান্নান আনন্দে কেঁদে ফেলেন।
মামুন জানায়, ভাল ফলাফল করেও উচ্চ শিক্ষার আশা সে অনেকটাই ছেড়ে দিয়েছে। অর্থাভাবে ভাল কোন কলেজে ভর্তি কিংবা উচ্চ শিক্ষা তার জন্য আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। সমাজের মহানুভব সমাজপতি ও সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মামুন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহীনিতে যোগদান করে দেশ সেবা করতে চায়।


***গৌরনদী ডট কমের পক্ষ থেকে আল মামুনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন