কারেন্ট দিয়ে ধরা হচ্ছে ইলিশের পোনা

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ অবরোধ দিয়া কি লাভ হইবে, এহন বাঁধা আর কারেন্ট জাল দিয়া দেদারছে ইলিশের পোনা ধরছে। মোরা সরকারের অবরোধ মাইন্যা চলছি, কিন্তু মোগো আশপাশের লোকজন ঠিকই অবরোদের পর ১ ইঞ্চি ইলিশের পোনা ধইরা শুটকি বানাইয়া বিক্রি করছে। সংবাদ কর্মীদের দেখে এরকম কথা গুলো বলেন পানপট্টি গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী সবুজ হাওলাদার। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে চরমোন্তাজ, রাঙ্গাবালী, পানপট্টি, মৌডুবির মোহনায় সারিবদ্ধভাবে বাঁধা এবং কারেন্ট জাল দিয়া ইলিশের পোনা মাছ ধরছে দেদারছে। চলতি বছরের ৬ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় অধিকাংশ জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থেকেছে। কিন্তু অবরোধ শেষ হওয়ার পর থেকেই কিছু সংখ্যক জেলেরা বাঁধা এবং কারেন্ট জাল দিয়ে সদ্য মা ইলিশের ছেড়ে যাওয়া পোনামাছ ধরছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে ইলিশের পোনার ওপরে কোনো (বিশেষ) নীদিমালা না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া চালানো যাচ্ছে না।

চালিতাবুনিয়া গ্রামের ট্রলার মালিক জলিল ফকির জানান,  সাগর উপকূলীয় মোহনায় প্রায় ৬ শতাধিক বাঁধা এবং কারেন্ট জাল দিয়ে ধরা হচ্ছে ইলিশের পোনা। এসব পোনা মাত্র ১ থেকে দেড় ইঞ্চি পরিমান বড় হয়েছে। এসব পোনা ধরে অন্যান্য মাছের সঙ্গে শুকিয়ে শুকি বানিয়ে পাচার করা হচ্ছে। চিনাবুনিয়া গ্রামের জেলে দুলাল হাওলাদার বলেন, মোরা সরকারের  আইন মাইন্যা অবরোধের (নিষেধাজ্ঞা) সময় ইলিশ মাছ ধরি নাই। এহন ইলিশ মাছের পোনা ধইরা যা সব মাইরা ফালাইতেছে, সরকার হেদিকে(সেদিকে) নজর দেয় না। মৎস্য অধিদফতরের গবেষনা মতে প্রতি বছর ৬ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত সাগরে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সময়। এ সময় সাগরে ইলিশ আহরন, মজুদ এবং বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ওইসব ডিমওয়ালা মা ইলিশ ডিম ছাড়ার পর ১ থেকে দেড় ইঞ্চি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেলেদের জালে শিকার হয়ে থাকে।

বর্তমানে ওইসব পোনা মাছ সাগরের উপকূলীয় বিভিন্ন মোহনায় ধরা হচ্ছে। এছাড়াও নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত ৭ মাস ইলিশের ছেড়ে যাওয়া পোনাসহ ছোট মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও জেলেরা অহরহ ধরছে মাছ। কিন্তু প্রশাসন এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, বাঁধা এবং কারেন্ট জাল ৪.৫ মেঃ মিঃ এর কম হলে তা মৎস্য আইনে অবৈধ। এ রকমের প্রকাশ্যে জাল পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ১ নভেম্বর থেকেই আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।