অর্থব বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির কর্মকান্ড

উম্মে রুম্মান,বরিশাল ॥ বরিশাল বিএনপির কর্মকান্ড বেগবান করতে যখন কেন্দ্র নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে  ঠিক তখনই নয়া ষড়যন্ত্রের কৌশল নিয়ে মাঠে বিএনপিনেমেছে খোদ ওই কমিটির সভাপতি ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক । তারা একের পর এক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে চলেছে ।

বরিশাল বিএনপির প্রভাবশালী নেতা সাবেক অর্থ-পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ আবুল হোসাইনকে যখন দলের চেয়ারপার্সন এলাকায় গিয়ে ফের বিএনপির মাঠ গোছাতে নির্দেশ দিলেন ঠিক তখন ঐ দু নেতা তার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে দলের তৃণমূল নেতা কর্মী ও জনগনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে ।  উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ এমপি ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুক্তা বরিশালের মিডিয়ায় ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করিয়ে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে বলে দাবী করেছেন শাহ মোহাম্মাদ আবুল হোসাইন। তারা সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ আবুল হোসাইন কে ক্যান্সার আক্রান্ত উল্লেখ করে সংবাদ প্রচার করে তার ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করে দলের কোন্দোল আরো তীব্রতর করে তুলেছে । ফলে এখানকার বিএনপি সুসংগঠিত হওয়ার চেয়ে বিভক্ত হয়ে পরছে দুটি ধারায় । আবুল হোসাইনের সমর্থকরা বলছেন, তারা তাদের নেতার নেতৃত্বে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে অংশনেবে এজন্য যখন মাঠ গোচাচ্ছিলেন ঠিক তখনই ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ফরহাদ ও মুক্তা । তবে এবিষয়ে উত্তর জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক নূরুল আলম রাজু বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই । আবুল হোসাইন এতদিন দলের কর্মকান্ড থেকে একটু দুরে ছিলেন তার মানে এইনয় যে সে বিএনপির কেউনয়। আবুল হোসাইন বিএনপির নেতা তাকে যদি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দলের কাজকরতে বলেন বা আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন দেন সেক্ষেত্রে তার হয়েই আমাদের কাজ করতে হবে । দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউই টিকতে পারেনি বলে দাবী নূরুল আলম রাজুর ।

সূত্র জানায়,বরিশাল উত্তর জেলার মধ্যে আলোচিত এলাকা মেহেন্দিগঞ্জ- হিজলা আসনের বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকান্ড এখন পুরোপুরি মূখ থুবড়ে পরেছে । সেখানে দীর্ঘ দিনেও দলের কোন কর্মসূচী পালিত হয়নি। এমনকি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীও পালন করেনি বর্তমান থানা কমিটি। দলের এই নাজুক আবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য তৃণমূল নেতাকর্মীরা সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর সড়নাপন্ন হচ্ছে । তারা দলের হাইকমান্ডে আবুল হোসেনের নেতৃত্ব দাবীকরে আসছে । তারই ভিত্তিতে দলের চেয়ারপার্সন আবুল হোসাইনকে দল গোছাতে এলাকায় গিয়ে পূর্বেও ন্যায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন ।

দল গোছাতে বা দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ড বেগবান করতে দীর্ঘদিন যাবত ব্যার্থতার পরিচয় দিয়ে আসছেন এখানকার বর্তমান সংসদ মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ ও তার করা কমিটির নেতাকর্মীরা এমন অভিযোগ করলেন খোদ দলের উত্তর জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি বর্তমান কমিটির সদস্য কেন্দ্রিয় সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য মোশারেফ হোসেন মঙ্গু।  তিনি বলেন সংসদ মেজবাহ ও তার খুব কাছের পরামর্শ দাতা আসাদুজ্জামান মুক্তার কারনে দলের এখন নুজুক অবস্থা ।

দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে উত্তর জেলা বিএনপি কোন প্রকার সভা সমাবেশ না করেই সাভাপতি ও সম্পাদক তাদের ইচ্ছেমত সিদ্ধান্ত লিখে রেজুলেশনে স্বাক্ষর নিতে নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন এমন অভিযোগ জেলার নেতা কর্মীদের।

কমিটির অধিকাংশ নেতারা বলেন, জেলা বিএনপির এক নেতা স্বাক্ষর নেয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। উত্তর জেলা বিএনপির কোন কোন নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষর জাল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

গৌরনদী-আগৈলঝাড়া ১আসনের চারদলীয় জোটপ্রার্থী বিএনপির  কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সোবহান জানান, বিএনপিকে শক্তিশালি করার জন্য দীর্ঘ ২৭ বছর রাজনীতি করছি দলকে ধ্বংশ করার জন্য নয়।  বর্তমান কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুক্তাসহ বেশ কিছু নেতা উত্তর জেলা বিএনপির কমিটিতে বির্তকিত কর্মকান্ডের জন্ম দিচ্ছে। একইসঙ্গে আ’লীগের বি-টিম হিসেবে কাজ করছে। আমি উত্তর জেলা বিএনপির সহ সভাপতি। জেলা উত্তর বিএনপি কোথায়  বসে সভা ও বৈঠক করেন কমিটির অধিকাংশরাই তা জানেন না। আগৈলঝাড়া বিএনপির কমিটি বাতিলের আগে ক্নো প্রকার সভা হয়নি। আর ব্যাকডেটে স্বাক্ষর নেয়া মানে দলকে সাংগঠনিক ক্ষতিগ্রস্থ করা বলে তিনি মন্তব্য করেন।  

কমিটিকে যারা বির্তকিত করে তুলছেন তারাই ওই ডেটে সভা দেখিয়ে স্বাক্ষর নেয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। একই কথা বললেন উত্তর জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহ-আলম, সহ সভাপতি হাসান মাহমুদ, ১নং যুগ্ন সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবির , শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হাফিজুর রহমান টিপু, ক্রিড়া সম্পাদক শাহ-আলম ফকির, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ শামিম, সদস্য আবুল হোসেন মিয়া, আব্দুল লতিফ মোল্লা প্রমূখ।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৩০ নভেম্বর বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। গত ২০ আগষ্ট নিয়ম বর্হিভূত ভাবে উপজেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি বাতিল করে বির্তকিত আহবায়ক কমিটির নামে একটি পকেট কমিটি গঠন করে। চার দলীয় জোট প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান অসাংগঠনিক এই কর্মকান্ডের প্রতিবাদ হিসেবে মহাসচিবকে অভিহিত করলে কেন্দ্রীয় বিএনপি ২৮ আগষ্ট উত্তর জেলা বিএনপিকে সোকচ করে। এর আগে ২৫ আগষ্ট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ মোল্লা আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবীতে মামলা ঠুকে দেন। প্রেক্ষিতে ২৯ আগষ্ট আদালত আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে  নিষেধাজ্ঞা জারি করে।