সত্যের উপর দাড়িয়ে থাকুক আমাদের ইতিহাস…WatchDog

আসলেই কি ৩০ লাখ শহীদ হয়েছিল ৭১ সালে? তাই যদি হয় তা হলে এর ভিত্তি কি? সংখ্যা নিশ্চিত করতে সরকারী অথবা বেসরকারিভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়ছিল তারও কোন রেকর্ড নেই। তাত্ত্বিকভাবে সংখ্যাটা সম্ভব হলেও বাস্তবে কতটা সম্ভব তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে। ক্যালেন্ডারিয় হিসাবে ’৭১ সালে পাকিস্তানীদের সাথে আমাদের যুদ্ধের ব্যাপ্তি ছিল ২৬৭ দিন, অর্থাৎ ৩,৮৪,৪৮০ মিনিট। ৩০ লাখ শহীদের হিসাবে ঐ সময়টায় মিনিটে প্রায় ৮ জন প্রাণ দিয়েছিল বাংলাদেশে। অন্যদিকে ৬৫ হাজার গ্রামের হিসাবে প্রতি গ্রামে প্রায় ৪৬ জন প্রাণ হারানোর কথা। পাঠক, এবার আপনি আপনার নিজ গ্রামে ফিরে গিয়ে তালিকা করুন ৪৬ জনের। ৫৪ হাজার বর্গমাইলের দেশে ৩০ লাখ শহীদকে দাফন করতে কতটা জায়গার প্রয়োজন সে হিসাবে আমাদের প্রতি পদক্ষেপে কবর থাকার কথা। আর তা যদি না পাওয়া যায় তাহলে অস্তিত্ব থাকার কথা শত শত গণকবরের। কোথায় সে সব কবর?

১ জন বাংলাদেশীকেও হত্যা করার আইনগত ও নৈতিক অধিকার রাখেনি পাকি সিফিলিসের দল। বাস্তবতা হল, তারা হত্যা করেছে, এবং তা করেছে পৈশাচিক উন্মত্ততায়। কিন্তু এ সংখ্যা ৩০ লাখ বিশ্বের কোন পরিসংখ্যানই এর স্বীকৃতি দেয়না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জাতি হিসাবে এ মুহূর্তে আমাদের একমাত্র গর্বের অধ্যায়। এ অধ্যায়ের শুরুটা আবেগ অথবা মিথ্যার উপর দাঁড় করালে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের দায়ি থাকতে হবে (কারণ সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবেই)। রাজাকার অথবা পাকিদের দোসর আখ্যায়িত করে আমার এ লেখাকে হয়ত উড়িয়ে দেয়া যাবে, কিন্তু তাতে ৩০ লাখের সমীকরণ মেলানো সম্ভব হবে বলে মনে হয়না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি নিবেদিত ব্লগারদের অনুরোধ করব যুদ্ধাপরাধী বিচারপর্ব শেষে শহীদ্‌দের তালিকা প্রণয়নের কাজে এগিয়ে আসার জন্যে। প্রজন্ম এখনো বেচে আছে যারা স্বাক্ষী হতে পারবে আমাদের ইতিহাসের। আসুন ফাকা বুলি না ঝেড়ে কাজে লাগাই সে সূযোগ।