কুয়েত ফেরত আট যুবক মানবেতর জীবন যাপন করছেন

ক্ষতিপূরন দাবি করেছেন। আজ তাদের বড়ই দুর্দীন। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রতারিত ওই যুবকেরা তাদের ক্ষতিপূরনের টাকা ফেরত পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সূত্রমতে, পরিবারের রুটি রুজির আশায় জমাজমি বিক্রি করে বিদেশ নামের সোনার হরিন ধরতে ২০০৩ সালে কুয়েত গমন করেছিলো গৌরনদী উপজেলার চররমজানপুর গ্রামের আবুল কালাম হাওলাদার (৩৮), মোতালেব হাওলাদার (৩০), পাশ্ববর্তী দিয়াশুর গ্রামের রিয়াজ মৃধা (২৮), কাসেমাবাদ গ্রামের সফিকুল ইসলাম (২৭), পিঙ্গলাকাঠী গ্রামের জাকির হোসেন (২৫), গরঙ্গল গ্রামের জামাল উদ্দিন (২৬), কমলাপুর গ্রামের সোহরাব খান (২৮), আগৈলঝাড়ার ফুলশ্রী গ্রামের আব্দুল মোতালেব (৩০)।

কুয়েত ফেরত ওইসব যুবকেরা জানান, তাদের ভিসার মেয়াদ ২ থেকে ৩ বছর থাকা সত্বেও শ্রমিক আন্দোলনের অজুহাতে কুয়েত সরকার ২০০৮ সালে জোড়পূর্বক তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।

কুয়েত ফেরত আবুল কালাম জানান, ২০০৮ সালে বেতন বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের শ্রমিকসহ বিভিন্ন দেশের কিছু সংখ্যক শ্রমিক কুয়েতে আন্দোলনে যোগদান করে। ওই আন্দোলনে যোগদান না করেও রেহাই পায়নি সে। কাজ শেষে বিশ্রামের জন্য রুমেই ছিলেন কালাম। সেখান থেকে পুলিশ তার ভিসার মেয়াদ থাকা সত্বেও জোড়পূর্বক আটক করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অমানুষিক নির্যাতনের পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। একইভাবে অমানুষিক নির্যাতনের পর গ্রেফতারের পর শূণ্যহাতে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বাকি সাতজনকে।   

কুয়েত ফেরত আব্দুল মোতালেব জানান, ওই সময় কুয়েতে শ্রমিক আন্দোলনের অভিযোগে বাংলাদেশ, নেপাল ও ফিলিপাইনের অসংখ্য শ্রমিকদের পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের একঘন্টা পরই ওই দেশে নিযুক্ত নেপাল ও ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতরা তাদের দেশের শ্রমিকদের ছাড়িয়ে নিলেও সে সময় বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা ছিলো রহস্যজনক।

গতকাল শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিসব উপলক্ষে গৌরনদীতে আয়োজিত র‌্যালী ও আলোচনাসভা অংশগ্রহন করেন ওইসব যুবকেরা। তাদের অভিযোগ, দেশে ফেরার পর সরকার তাদের ক্ষতিপূরন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলো। বরিশালের জনশক্তি ব্যুরোর সহায়তায় তারা ক্ষতিপূরনের ফরম পূরন করে জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু গত দু’বছরে এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় তারা এখন রিতিমতো হতাশায় ভূগছেন। আর পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।