ঝালকাঠী জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী-ঠিকাদারের গোপন আতাঁতে ৪০ লাখ টাকা লোপাট!

আতাঁত করে ৬০টি গভীর নলকুপ স্থাপনের টেন্ডার প্রক্রিয়া লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের পাশ কাটিয়ে কোন প্রকার টেন্ডার আহবান না করে গোপন সমঝোতার মাধ্যমে এক বছরের আগে টেন্ডার ধারাবাহিকতায় নির্বাহী প্রকৌশলী প্রায় ৪০ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেয়ার পর বিষয়টি ফাঁস  হয়ে যায়।  বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিস্মিত ও হতবাক ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ রাজ্জাক সেলিমসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ওয়াটার সাপ্লাই প্রোগ্রাম প্রজেক্টের আওতায়  জেলার ৪ টি উপজেলায় প্রায় ৪০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ৬০টি গভীর নলকুপ বরাদ্ধ করা হয়। এ প্রজেক্টের আওতায় জেলার সদর উপজেলায় ২৫টি, নলছিটি উপজেলায় ২০টি, রাজাপুর উপজেলায় ০৯টি ও কাঠালিয়া উপজেলায় ০৬টি গভীর নলকুপ বন্টন করা হয়। ঝালকাঠি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্মারক নং-৯৩ পত্রে ২৪মে ২০০৯ ইং তারিখে কার্যাদেশ নং-৬৫৭ এর ধারাবাহিকতায় ২১ লাখ ৭শ ২৬ টাকা ব্যয়ে ৩৬ টি গভীর নলকুপ স্থাপনের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স একে ট্্েরডার্স ,ফজলুল হক এভিনিউ, বরিশালকে কার্যাদেশ প্রদান করে। অনুরুপভাবে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়াসহ ৪ উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের কার্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পত্র দেন।

সূত্রজানায়, প্রাকৃতিক দূর্যোগ আইলা ও সিডর উপদ্রব এলাকা হিসাবে উক্ত প্রকল্পের আওতায় জেলায় বরাদ্দকৃত ৬০টি গভীর নলকুপের বিষয়ে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের কাছে সম্পূর্ন গোপন রাখা হয়।  জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসককেও না জানিয়ে এবং বিগত দ’ুটি মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় অবহিত না করে টেন্ডার প্রক্রিয়া সস্পন্ন করে । এমনকি তিনি কোন নতুন টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে বিগত ২৪মে ২০০৯ ইং তারিখে সম্পন্ন হওয়া একটি টেন্ডারের (কার্যাদেশ নং-৬৫৭) অনুকুলে কার্যাদেশ প্রদানের একমাস ২০ দিন পর বিষয়টি  জনপ্রতিনিধিদের মাঝে জানাজানি হয়ে গেলে  তোলপাড় শুরু হয়। এ অবস্থায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মিলে জনপ্রতিনিধিসহ তাদের ঘনিষ্টদের ম্যানেজ করার জন্য মোটা অংকের মিশন নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে বলে জানাগেছে ।                                                          

একটি সুত্র জানিয়েছে এ ব্যাপারে গত ৪ নভেম্বর সরকারী বিধিমোতাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করে সরকারী সেবা জনগনের কাছে পৌঁছে দিতে সহযোগীতা করার জন্য ঝালকাঠি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলমকে পত্র প্রদান করে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বরিশাল সার্কেল বরিশালকে সদয় অবগত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান সৈয়দ রাজ্জাক সেলিম  সাংবাদিকদের বলেন,  সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু আমাকে বিষয়টি জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলে আমিও বিষয়টি জানিনা বলে তাকে অবহিত করেছি। আমি এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভূক্ত নয় বলে জানান ।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আঃ কুদ্দুস  সাংবাদিদের জানিয়েছেন, টেন্ডার প্রক্রিয়াটি নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর নিয়ন্ত্রন করেন , আমরা স্থান নির্বাচন ও বাস্তবায়নেরে বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকি।

 

এম.মিরাজ হোসাইন, বরিশাল থেকে